আহ্ এক অসহায় মায়ের কান্না
আজ ঢাকার এক এলাকা থেকে এক অসহায় মেয়ের অসহায় মা আমাদের অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপে কল করেছিলেন। অনেক কাঁদতে ছিলেন। তিনি বললেন: হুজুর আমার একটি মেয়ে আছে, বয়স ২৩, মাশাআল্লাহ অনেক সুন্দরী। তার ৫ বছর স্বামী নেই। ৫ বছরের একটি শিশু সন্তান আছে। তার বাবা আর খোঁজ নেয় না। আমিও বিধবা, কোনো ছেলে নেই। এই অভাগীনি মেয়েকে নিয়ে ৫ বছর খুব কষ্ট পাচ্ছি। আমার তো যা হয়েছে হয়েছে ওর জীবন কাটবে কীভাবে? হু হু করে কেঁদে দিলেন। আমি বললাম: আন্টি এতদিন বিবাহ দেননি কেনো? সে আবার কেঁদে দিয়ে বললো: কী বলবো? তার ডিভোর্স হওয়ার কারণে সমাজের লোক আমাদের অনেক ছোট নজরে দেখে। ৪/৫ জন এসেছিলো বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে, কিন্তু কেউ তার ছেলেকে পালতে রাজি হয় নি। তাই সেও বিবাহ করেনি। এভাবেই কাটছে দিন। আমি মা হয়ে আর মানতে পারছি না। আমি নিজে বিধবা হয়ে আমার মেয়ে ও নাতীকে সারাজীবন কেমনে পালবো? কালকে আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব বললেন আপনি IMB তে যোগাযোগ করেন, আর আপনার নাম্বার দিলেন, তাই আপনাকে কল দিলাম। আরো বললেন, হুজুর আপনাদের অনুরোধ করি, যেভাবেই হোক আমার অসহায় মেয়ে ও নাতিনের জন্য কিছু একটা করেন!!
আমি বললাম: ইনশাআল্লাহ, আমার IMB-তে হাজারো যোগ্য নববী আদর্শের দীনি ভাইয়েরা আছেন, তারা আপনার মেয়ে ও নাতির দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত আছে। আপনার নাতীকে নিজের সন্তানের মত করে বড় করবে। তিনি বললেন, এমন মহান মানুষ কি বাংলাদেশে আছে? বললাম, আমাদের IMB-র মেহনতে এমন হাজার হাজার আদর্শিক পুরুষ এখন তৈরি হচ্ছে, আলহামদুলিল্লাহ। তিনি বললেন, আমি জানতাম, নবী সাহাবীরা অসহায় বাচ্চার মাদেরকেও বিবাহ করতেন। অনেকগুলো নারীর দায়িত্ব নিতেন। কিন্তু বাংলাদেশে মনে হয় এমন মানুষ নাই। যাক এই অসহায় মায়ের পক্ষ হতে তোমার ও তোমার IMB-র সকল সদস্যদের জন্য দোয়া রইলো।
আমি বললাম: আপনার মেয়ে মাসনা সুলাছা অর্থাৎ ২য় স্ত্রী বা ৩য় স্ত্রী হতে রাজি আছে? বা আপনি রাজি আছেন?
তিনি বললেন: আগে মনে করতাম এগুলো খুব খারাপ, কিন্তু কাল ইমাম সাহেব আপনার অনেকগুলো বয়ান শুনায়। আর নবীর সুন্নাত বুঝালো। আর সমাজের লোকের বাস্তবতাটাও বুঝালেন। তাই আমি ও আমার মেয়ে আল্লাহর এই বিধানের ব্যাপারে কোনো আপত্তি করবো না। আমি বুঝেছি, সমাজের দিকে তাকাতে গেলে আমার মত আমার মেয়ের জীবনও শেষ হয়ে যাবে? স্বামী হারা জীবন কত কষ্টের তা কেবল একজন বিধবা বা ডিভোর্সীরাই জানে। এই বলে আবার ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠলেন।
আমি বললাম তো আপনার কী হয়েছে? তিনি বললেন এই মেয়ের বয়স যখন ১০ বছর ছিলো তার বাবা মারা যান। এত বছর এই বাবা হারা মেয়ে নিয়ে একাই চলেছি। আমি বললাম বিয়ে করেন নি কেনো? বললো কেউ বিয়ে দেয়নি। সবাই বলতো মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আর বিয়ে করিস না। আমারও এমন হয়েছিলো, কেউ বিয়ে করতে চাইলে মেয়ে মানতে রাজি হতো না। এভাবেই আমার জীবনটা কেটে গেছে।
আমি বললাম আমরা আপনারও বিবাহ দেবো, আপনার বয়স কত। তিনি একটু আশ্চর্য হয়ে বললেন আমার বয়স ৩৮ বছর। এত বড় মেয়ে আছে, কে আমাকে বিয়ে করবে তাও এতদিন পরে? আমি বললাম: আমরা ৪৮ বছরের মেয়েকেও বিবাহ দিয়েছি, গত পোরশু দুই সন্তানসহ ৩৯ বছরের নারীকে একজন যোগ্য ব্যক্তির সাথে বিবাহ দিয়েছি, আপনারও বিবাহ দেওয়ার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ। তিনি কেঁদে উঠলেন আর বললেন: আপনি যেই মায়ের পেটে জন্ম নিয়েছেন সেই গর্ভধারীনির জন্য অনেক ছালাম থাকলো। আপনার আম্মুকে আমার ছালাম জানায়েন। আরো কিছু কথা হয়েছে……
আলহামদুলিল্লাহ, IMB-র মাধ্যমে এই মাসের মধ্যেই এই অসহায় মা ও মেয়ের নাতিসহ উভয়ের বিবাহের ব্যবস্থা করা হবে ইনশাআল্লাহ। ধন্যবাদ ওই ইমাম সাহেবকে যিনি এই পরিবারের হেফাজতের ওসীলা হলেন।
মুহতারাম! এমন লাখো লাখো পরিবার আছে বাংলাদেশে। যাদের আর্তনাদ শোনার সময় এই নষ্ট সমাজের নেই। তাদের আত্মচিৎকার ও বুকফাটা কান্নার আওয়াজ কারোর শোনার টাইম নেই। কিন্তু কেউ যদি এমন অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে চায়, তাকে গালি দেওয়া বা ভৎসনা করার হেব্বি টাইম থাকে। কেউ এমন অসহায়কে বিয়ে করলে সমাজ ও পরিবারের লোকেরা বলবে তোর রুচি এত খারাপ!!
আমি বাংলার সামর্থ্যবান ন্যায়পরায়ণ সকল দীনি ভাইয়দের কাছে অনুরোধ করবো: আপনি এমন অসহায়দের পাশে থাকার নিয়ত করুন। এটি নবীর সুন্নাত , সাহাবীদের আদর্শ। সমাজের লোক খারাপ বলুক, বড় স্ত্রী মানবে না , না মানুক, আপনার ইমামতি ছুটে যাবে যাক। দেখবেন আল্লাহর নুসরত আপনার সাথে থাকবে ইনশাআল্লাহ।
বিশেষ করে যারা বৌ থাকার পরেও অনিচ্ছায় অন্যায় কাজে টাকা ব্যায় করেন।(যদিও এই লোকের সংখ্যা ৮০%) আপনি অন্যায় না করে যদি সামর্থ্য থাকে আর আদালত করার পূর্ণ ইচ্ছা থাকে, তাহলে মাসনা সুলাছা হিসেবে হলেও এমন অসহায় মেয়েকে বিবাহ করুন। অনেক ছাওয়াব পাবেন। আপনারও সতীত্বের হেফাজত হলো, এই অসহায় নারী ও এতীমদের হেফাজত হলো।
Ideal Marriage Bureau-IMB পুরো বিশ্বব্যাপী নবীর এই সুন্নতকে বাস্তবায়ন করতে চেষ্টা করছে। আদর্শ দাম্পত্য জীবন গড়তে এবং মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির নীরব আন্দোলন করে যাচ্ছে। চাইলে আপনিও এই কাফেলার সঙ্গী হতে পারেন। নিজের করার সামর্থ্য না থাকলে উক্ত ইমাম সাহেবের মত কোনো এক অসহায়কে IMB-র সাথে যোগাযোগ করিয়ে দিন।